কন্টাক্ট লেন্স: ফ্যাশন নয় শুধু, প্রয়োজনও

ফ্যাশনের যুগে বহু মানুষের পছন্দের চাহিদা কন্ট্যাক্ট লেন্স। চশমার বিকল্প হিসেবে আজকাল কন্ট্যাক্ট লেন্স বেশ জনপ্রিয়। যারা চশমা পরতে চান না তারা পাওয়ারযুক্ত কন্টাক্ট লেন্স ব্যবহার করতে পারেন। এখন মহিলারা তাদের চোখের রংও বদলে ফেলে পছন্দ মতো রং এর চোখ বানিয়ে নিচ্ছেন। এটাকে কালার কন্টাক্ট লেন্স বলা হয়।

চোখের ভেতরে একটা পাতলা প্লাস্টিকের রঙিন আবরন যা দেখতে ঠিক চোখের মতো, তা স্থাপন করে নিজেদের ইচ্ছেমতো রঙের চোখ পেতে পারেন।কন্টাক্ট লেন্স সাধারণত তিন ধরনের হয় হার্ড,আরজিপি ও সফট কন্টাক্ট ।

ব্যবহার বিধি

কন্টাক্ট লেন্স নিয়মিত নির্দিষ্ট সলিউশন বা তরল দিয়ে পরিষ্কার করতে হবে। মেয়াদ-উত্তীর্ণ তরল ব্যবহার করবেন না। বেশি পুরনো হয়ে গেলে কন্টাক্ট লেন্স পরিবর্তন করবেন। হার্ড কন্টাক্ট লেন্স বেশিক্ষণ ব্যবহার করা উচিত নয়। প্রয়োজনে দৈনিক অল্প সময় (৩-৪ ঘণ্টা) ব্যবহার করা যায়। আরজিপি এবং সফট কন্টাক্ট লেন্স ১৫-২০ ঘণ্টা ব্যবহার করা যায়। প্রতি ২৪ ঘণ্টা পরপর নির্দিষ্ট তরল বা সলিউশন দিয়ে লেন্স পরিষ্কার করা উত্তম। কন্টাক্ট লেন্স ব্যবহার করা অবস্থায় চোখ লাল হলে লেন্স খুলে ফেলতে হবে এবং খুব শিগগিরই চক্ষু বিশেষ জ্ঞের পরামর্শ নিতে হবে।

কীভাবে যত্ন নিবেন :

বেশ সেনসেটিভ একটি জিনিস কন্ট্যাক্ট লেন্স। শুধু ব্যবহার করলেই হবে না, চাই পর্যাপ্ত যত্ন ।
লেন্স ধরার আগে ভালো করে হাত ধুয়ে নিতে হবে। তারপর পুরোপুরি শুকিয়ে নিন। লেন্স লাগানোর সময় যেন কোনোভাবেই নখের সঙ্গে স্পর্শ না হয় এবং আঙুলের অগ্রভাগে ব্যবহার করুন।লেন্সের ব্যবহার করার পর লেন্সটি সলুশন দিয়ে ভালো করে ক্লিন করে রাখতে হবে।

যখন লেন্সটি ব্যবহার করা হবে না, তখন সলুশনে ডুবিয়ে রাখতে হবে।

যেসব লেন্স ব্যবহার করলে অস্বস্তি হয়, ওইসব লেন্স ব্যবহার না করাই উত্তম।সাধারণ কন্টাক্ট লেন্সগুলো দিনের বেলা চোখে পরা হয় এবং রাত্রে ঘুমের পূর্বে নির্দিষ্ট কেসের মধ্যে খুলে রাখা হয়। লেন্সের প্রকারভেদে ১২-১৬ ঘণ্টা পর্যন্ত এই লেন্স পরে থাকা যায়।

সাধারণ কন্টাক্ট লেন্সের উপরে এক ধরনের রং করে রঙিন কন্টাক্ট লেন্স তৈরী করা হয়ে থাকে। যেহেতু রং একটি কেমিক্যাল, এজন্য অনেকের চোখে ঐ রং-এর জন্য এলার্জি বা পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হতে পারে।যারা সৌন্দর্য বাড়াবার জন্য রঙিন কন্টাক্ট লেন্স ব্যবহার করতে চান তাদের জন্য প্রথম কয়েকদিন ট্রায়াল হিসাবে ব্যবহার করা যেতে পারে। কোন সমস্যা না হলে তখন ঐ ব্রান্ডের কন্টাক্ট লেন্স ব্যবহার করা যেতে পারে।যাদের চোখে পাওয়ার আছে তাদের জন্য প্রথমে সাধারণ কন্টাক্ট লেন্স ব্যবহার করে- ২য় ধাপে রঙিন+পাওয়ার কন্টাক্ট লেন্স ব্যবহার করা যেতে পারে।

আমাদের দেশে অনেকেই আছেন উপযুক্ত পরীক্ষা না করেই চশমার দোকান থেকে কন্টাক্ট লেন্স নিয়ে ব্যবহার করেন এবং অনেক সময় নানা সমস্যা নিয়ে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শের জন্য আসেন। তবে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসককে দিয়ে পরীক্ষা করে এবং নিয়ম মেনে চললে কন্টাক্ট লেন্স চোখের জন্য ক্ষতিকর নয়।

ডা.ফারহানা হোসেন
এম বি বি এস,এফ সি পিএস(চক্ষু )
ডি সি ও,এফ আই সি ও ( ইংল্যান্ড )
সহকারী অধ্যাপক(জি এল এম সি )
চক্ষু বিশেষজ্ঞ ও সার্জন
খিদমাহ হাসপাতাল,খিলগাঁও

ছবি কৃতজ্ঞতা – ডা.সাবরিনা আরিফ চৌধুরী

Related posts

One Thought to “কন্টাক্ট লেন্স: ফ্যাশন নয় শুধু, প্রয়োজনও”

  1. Asad Zaman

    খুব ভাল একটা পোস্ট।আশা করি সবাই পড়ে উপকৃত হবে।

Leave a Comment