খাদ্য ও পুষ্টি বিষয়ক ধর্মের নির্দেশনা

বেঁচে থাকার জন্য খাবার প্রয়োজন নাকি খাবারের জন্য বেঁচে থাকা? আমরা অনেকেই যেভাবে খাই তাতে মনে হয় যেন খাওয়ার জন্যই আমরা বাঁচি। শুধুমাত্র খাওয়াই জীবনের একমাত্র কাজ। এর ফলে শারীরিক ভাবে অসুস্থতা তৈরি হয়, হয় বিভিন্ন জটিল ব্যাধি। তা ছাড়া আমাদের সব ধর্মেও কম খাবারের কথা বলা হয়েছে।

আসুন আমরা জেনে নেই খাদ্য ও পুষ্টি বিষয়ক ধর্মের নির্দেশনা কি।

এক বুজুর্গ ব্যাক্তির আগমন চেম্বারে, উচ্চতা অনুসারে ওজন হয় ৭৪ কেজি । ওনার ওজন ৯৮ কেজি । ২৪ কেজি বেশী মাত্র । খাবার যা মেনু শুনলাম তা শুনে আামার চোখ চরখ গাছ । বললাম হুজুর আপনি তো একাই ৫ জনের খাবার খাচ্ছেন, আমাদের ধর্মে কি কোথাও এতো খাবার খাওয়ার অনুমতি দেয়া আছে? শুনে হুজুর গেলেন বেজায় খেপে বললেন খাবারের সাথে ধর্মের কি সম্পর্ক ? আমি বললাম সম্পর্ক তো কিছু আছেই, আমাদের নবী করিম (সাঃ) বলেছেন যে উদরপূর্তি করে খাওয়ার মত খারাপ কাজ আর কিছুই হতে পারে না। অবশেষে অনেক কষ্টে ওনাকে বোঝাতে সক্ষম হলাম যে শুধু ইসলাম ধর্মই না সব ধর্মতেই বেশী খাওয়াকে শুধু নিরুৎসাহিতই করা হয় নাই নিষেধ ও করা হয়েছে ।

আবু করিমাহ (রাঃ) কতৃক বর্ণিত হাদিস –

হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) বলেছেন যে উদরপূর্তি করে খাওয়ার মত খারাপ কাজ আর কিছুই হতে পারে না।

শরীর সুস্থ ও সবল রাখার জন্য কয়েক লোকমাই যথেস্ট। কিন্তু কেউ যদি পেট ভরেই খেতে চায়, সে যেন পাকস্থলির এক-তৃতীয়াংশ খাদ্য, এক-তৃতীয়াংশ পানি এবং বাকী এক-তৃতীয়াংশ বাতাস দিয়ে পূর্ন করে, যাতে শ্বাস প্রশ্বাসের সুবিধা হয়।

তিরিমিযী হাদিস
হাদিস নং-৫১৬

গুড হেলথ্
(রেলিভেল্ট বিব্লিক্যাল টেক্সট অন গুড হেলথ্)

“যারা শুধু শুধু আঙুররসে মত্ত হয়, তাদের সঙ্গী হয়ো না, যারা পেটুক ও মাংস বেশী পছন্দ করে, তাদেরও সঙ্গী হয়ো না কেননা মাতাল ও পেটুকের শেষ দশাই হবে দীনতা, আর ঘুম ঘুম ভাব মানুষকে ছেঁড়া কাপড় পরায়”

শ্রীমদ্ভগবদ গীতার ১৬ অধ্যায়-

“যঙ্গ, দান ও তপস্যার ন্যায় সকলের প্রিয় আহারও তিন প্রকার হয়।”

যে আহার গ্রহন করলে মানুষের আয়ু বাড়ে, শরীর,মন ভালো থাকে, দুষ্পাচ্য নয়, শরীর সুস্থ থাকে ও শরীরে শক্তি প্রদান কওে
যেমন: ফল, দুধ, বাদাম সহ সকল শর্করা ও কম স্নেহযুক্ত খাদ্য সাক্তিক ব্যক্তিগনের প্রিয়।

যে খাদ্যের সাদ অতিরিক্ত টক, ঝাল, তিতা, লবনাক্ত হয় সে খাদ্য রাজসিক ব্যক্তিগণের প্রিয় হয়। এই খাদ্য গ্রহনে ব্যক্তির
পরিনাম দুঃখ, শোক এবং রোগ উৎপন্নকারী হয়।

যে খাদ্য পরিপূর্ণভাবে রান্না হয়নি, যার সাভাবিক গুন নষ্ট হয়ে গিয়েছে, অতিরিক্ত গন্ধযুক্ত খাদ্য, আগের দিনের রান্না করা খাবার
তামসিক ব্যক্তিগনের প্রিয়।

ডাঃ সজীব আহমদে
এম বি বি এস (ডি ইউ)
সি সি ডি (বারডেম)

Related posts

Leave a Comment